Friday, July 16, 2021

ঘরের রাণী নারী


ঘরের রাণী নারী

দিগন্ত জুড়ে পাখিদের অবাধ বিচরণ। বাধাহীন এক স্বাধীনতা।জবাবদিহিতার বাধ্যকতা নেই।নেই প্রশ্নবোধক চিহ্নের উপস্থিতি। বাতাসের মত যেখানে যেথায় ঘুরে বেড়ায়।প্রতিদিন নতুন সূর্যোদয়ের সাথে জীবনে আসে নতুনত্ব।দিনের ক্লান্তি শেষে পাখিরা ফের নীড়ে ফেরার প্রত্যয়ে সূর্যাস্ত আকাশে ওড়ে।
পাখিদের এমন মুক্ত বাতাসে ওড়া দেখে কারো কারো খুব সখ জাগে যদি পাখি হতাম।কারো পবিত্র বাসনা ; পাখি হলে ওড়ে যেতাম সোনার মদিনায়।কারো অনৈতিক বাসনা বিলাস জাগে।
কেউবা খুঁজে বেড়ায় স্বাধীন   পরিবেশ।যেটাকে বলা হয় মুক্ত বাতাসের খোঁজে।তথাকথিত নারী স্বাধীনতার নামে যারা বেহায়াপনার উষ্ণতাপে চারপাশটা প্রখর করে তুলছে।
নারী অধিকারের শ্লোগানে নারীদের পণ্য সামগ্রির মতো ব্যবহার করছে।সুস্থ মানুষের মাঝে সমঅধিকারের আশ্রয়ে যে অস্বস্তি তৈরি করছে। সামাজিকতার দোহাই দিয়ে যারা নিত্য লিপ্ত অসামাজিক কার্যকলাপে। পোষাক সৌন্দর্য্যের নামে উলঙ্গপনার বেসাতি যারা গড়ে তুলছে।
এরা মূলত পশ্চিমা চিন্তাভাবনায় লালিত কিংবা প্রভাবান্বিত।নারীবাদের নামে বিশ্বে আজ যে নোংরা বাতাস বইছে এটাকে তারা বলছে স্বাধীনতা। মূলত এরা পশ্চিমাদের মদদ জোগাচ্ছে। কেননা
নারীবাদ কিন্তু পশ্চিমা সংস্কৃতিরই একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। 
যারা নারীকে মুক্ত বাতাসের খোঁজ দিতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করে।মূলত জ্ঞানের স্বল্পতায় তাদের এসব অমূলক ধারনা জন্মে।
ইসলাম নারীকে যে সম্মান দিয়েছে পৃথিবীর অন্য কোন ধর্ম,সভ্যতা,সংস্কৃতি, মত বা পথ তা দিতে ব্যর্থ।
আল্লাহ তা'আলা কুরআনে বলেনঃالرجال قوامون علي النساء
পুরুষরা নারীদের কর্তা। - সূরা নিসাঃ ৩৫
বিভিন্ন কারণে আল্লাহ তা'আলা পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব নারীদের তুলনায় বেশী দিয়েছেন।কেনন  হাদীসের ভাষ্যমতে নারীদের نصف العقلতথা অপূর্ণাঙ্গভাবে সৃষ্টি করা করা হয়েছে।
রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন নারীদের দ্বীন ও জ্ঞানে অপূর্ণতা রয়েছে।দ্বীনের অপূর্ণতা হল তারা রক্তস্রাব চলাকালীন নামাজ,রোজা করতে পারে না।জ্ঞানের অপূর্ণতা হল তাদের সাক্ষমান পুরুষের অর্ধেক।তবে কর্তার দায়িত্ব কর্তৃত্ব খাটানো নয় বরং হাদীসে আছে- سيد القوم خادمهم 
কর্তা তার অধীনস্থদের সেবক।
অর্থাৎ স্ত্রীর দেখবাল করা। ভালো মন্দের খোজ খবর নেয়া যাবতীয় সকল বিষয় স্বামীর দায়িত্ব। একজন দায়িত্ববান স্বামী কখনো স্ত্রীর প্রতি অবিচার হয় এমন কাজ কখনো করবে না।
তাছাড়া একজন নারী যখন মা হয় তার সম্মান পৃথিবীর সকল মানুষের চেয়ে বেশী দেয়া হয়েছে স্বয়ং হাদীসে এমনটি বলা হয়েছে।কিছু কিছু ক্ষেত্রেতো মনে হয় নারীকেই আল্লাহ তা'আলা পুরুষদের তুলনায় অগ্রাধিকার বেশী দিয়েছেন। যেমন মিরাস বন্টনের ক্ষেত্রে মহিলার পাওনা নির্দিষ্টভাবে কুরআনে উল্লেখ রয়েছে  কিন্তু পুরুষের ক্ষেত্রে তা নাই।
এখন কথা হল পুরুষের চেয়ে নারী কম পাবে কেন?
দেখুন! নারীদের খরচের কোন জিম্মাদারি নাই।
বিয়ের পূর্বে পিতার উপর এবং বিয়ের পর স্বামীর উপর তার জিম্মাদারী। এদিকে পুরুষের উপর সকলের জিম্মাদারি। তাহলে সে যদি কমও পায় হিসেব করলে দেখা যাবে তার অংশই বেশী।সে স্বামী,বাবা দুজন থেকেই পাচ্ছে অথচ তার কোন খরচ নাই।
তবুও যদি নারীবাদীরা বলে ইসলাম নারীকে সম্মান দেয় নাই, জ্ঞানের স্বল্পতা বৈ অন্য কিছু নয়। 
ইসলাম বরং নারীকে স্বর্ণ,রৌপ্য আর মুক্তার মত সম্মান দান করেছে।দামী জিনিস যেমন গোপনে থাকে,সমস্ত ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকে।মানুষ একান্ত নিজের যত্নে রাখে, যাতে কোন ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনাও না থাকে। আল্লাহ তাআ'লা নারীকে ঠিক মণি-মুক্তা বরং তার চেয়েও বেশী সম্মানিত করেছেন।কিন্তু নির্বুবুদ্ধিতার দরুন কিছু নারী আজ তা বুঝতে চায় না।
তাদেরকো দুনিয়ার সমস্ত ঝামেলা থেকে মুক্ত রাখতে চাইছেন, দুনিয়ার অন্ধ মোহে,লোভ - লালসা থেকে বিরত রাখতে চাইছেন কিন্তু তসলিমার মত সমঅধিকারের নামে বেশ্যারা তা বুঝেও অপরকে বিভ্রান্ত করছে। 

"আমার দেহ আমার মন যাকে খুশি তাকে দিব"
 কোন সুস্থ বিবেকবান ব্যক্তিও বুঝতে পারবেন এটা কতটা অসুস্থ প্রকৃতির কথা।যেখানে আল্লাহ তা'আলা বলেছেন - قل ان صلواتي نسكي و محياي و مماتي لله رب العالمين
বলুন হে নবীঃ আমার জীবন মরণ সবকিছুই আপনার, সবই আপনার অধীনে, আপনার কর্তৃত্বে।{ সূরা আনআমঃ ১৬২}
তাইতো আত্নহত্যা মহাপাপ বিবেচিত করা হয়েছে। কারণ আমার জীবনের সমস্ত অধিকার কেবল তারই যিনি আমার জীবন দান করেছেন, যিনি আমাকে অনস্তিত্বের পর অস্তিত্ব দান করেছেন।মানুষ কত অকৃজ্ঞ!আল্লাহ তা'য়ালা কুরআনে বলেনঃهل اتي علي الانسان حين من الدهر لم يكن شيا مذكورا
মানুষ কী একসময় এমন ছিলনা যখন তার কোন আলোচনাই ছিলনা।তার নাম নিশানা বলতে কিছুই ছিলা না।{ সূরা দাহরঃ০১}
কিন্তু মানুষ দুনিয়াতে এসে রবকেই গালি দেয়।
নারীবাদীরা আজ নানান স্লোগান তোলে।
# নারীর পোষাক কী দায়ী?
আমাদের সমাজে বহু নারী আছে ; পোষাকের পরওয়া করে না।যাচ্ছেতাই পোাষাক পরিধান করে।আল্লাহ তা'আলা পোশাক কে আবরণের জন্যে তৈরি করেছেন।লজ্জা ঢাকার বস্তু বানিয়েছেন। 
নারীদের আপাদমস্তক ঢেকে রাখা ফরজ করেছেন,কিন্তু নারীদের একটি বিরাট অংশ এটাকে নিজেদের স্বাধীনতাক্ষুন্ন মনে করছে।
নারীবাদী তসলিমা লিখেনঃ
ভাই আর আমি ঢাকা থেকে বাড়ী গেলাম।ভাই তার জামা-কাপড়ে খুলে বিশ্রাম নিচ্ছে।কিন্তু নারী হওয়ার কারণে  আমি এ অধিকার থেকে বঞ্চিত। 
কী পরিমাণ নির্লজ্জ হলে এমন কথা বলতে পারে।
কথায় বলে, "সুখে থাকলে ভূতে কিলায়" আল্লাহ তা'আলা যেখানে তাদের এত মর্যাদা দান করেছেন ; এমন অকৃজ্ঞতা কোন পর্যায়ের অবিচার! 
আজকাল পোষাকের কথা কিছুই বলার নেই।দিবালোকের মত স্পষ্ট। প্রধান হোতা হিসেবে সিনেমা পাড়াকে যদি দোষী বলি তাহলে বিন্দুমাত্র কম হবে না।
পোষাকগুলোই যেন ধর্ষণের দিকে প্রবলভাবে আকৃষ্ট করে।
সম্প্রতি ধর্ষণের শিকার  সিনেমাপাড়ার মেয়েটির প্রোফাইল পিকচার দেখলেই বোঝা যাবে নারীর অশালীন পোশাক তার হেনস্তার জন্যে দায়ী নয় কী?
তবুও ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনগুলোতে নারীদের পোষাক দেখে রীতিমতো অবাক হতে হয়।এ দায়বদ্ধতা কার তবে?
নারীর পোষাকই যদি ধর্ষণের দিকে আকৃষ্ট করে তাহলে এমন পোষাক কেন দেয়া হচ্ছে নারীকে।
এ নারী কেমন সমাজ উপহার দিবে আগামীকাল। 
তারপরো যদি বোধদয় না হয়, আর বলে যেমন খুশি পোশাক পরবে তাহলে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারা নয় কী?
#  সমাজের দায়বদ্ধতা কোথায়?

নারীবাদীরা শিক্ষাঙ্গনে আজ তাদের মিশন বাস্তবায়নে তৎপর।  অবৈধ সহশিক্ষার ফলে আজ নারীরা শিখছে কী? 
থাকবো না আর বদ্ধ ঘরে দেখব এবার জগৎটাকে।
দেখুক যত দেখার কিন্তু শ্লোগানের মধ্যে কেমন অবাধ্যতার সুর, যেন জোরপূর্বক কেও তাকে আটকে রেখেছে।
যেন শান্তি হরন করেছে। যেন অশান্তির শৃঙ্খল থেকে মুক্তি চায়।তবে কোন জগতে যেতে চায়। কোন সভ্যতায় পা বাড়াতে চায়। সামাজিক শিক্ষা ব্যবস্হার তাই আজ সংস্কার দরকার। 
কতকাল আর ব্রিটিশ প্রণীত সিলেবাসে জড়িয়ে থাকবে এ দেশের মেরুদণ্ড। এ দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎগুলো ধ্বংসের অতলান্তে আর কত যাবে?

পরিশেষে নারীরাই আমাদের মা, আমাদের বোন,আমাদের অর্ধাঙ্গীনি।তাদের ফিরিয়ে আনুন শান্তির পথে। ঘোরে ঘেরা এ জীবনের ঘুর্ণাবতে আর কতকাল ঘুরবে নারীর জীবন চাকা।
তথাকথিত নারী স্বাধীনতা কিন্তু আমাদের পুরুষরাই উস্কে দিচ্ছে। 
আর তসলিমার দোসররা সেটাকে সফলতার রুপ দিচ্ছে। 
নারী তুমি ঘরের রাণী।
তুমি সমাজের রাণী।তুমি পৃথিবীর রাণী।তুমিই জান্নাতের রাণী।
আমার অসুস্থ সমাজ আবার সুস্থ হয়ে উঠুক।আমার মা,আমার বোন আবার প্রাণ খুলে হাসুক।পবিত্র জীবন সন্ধানী হোক। আর মুক্ত বাতাসের মুক্তি ঘটুক। 
পৃথিবীটা খুব বেশী ভাল থাকুক

শেয়ার করুন

0 coment rios: